বর্তমান নিউজ.কমঃ
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগরে হালিম মেম্বার বাহিনীর উপর সন্ত্রাসী হামলা করে গুরুতর আহতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রাসেল চৌধুরীর জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আসামী রাসেল মেম্বার সহ সিফাতসহ মোট চার জন জামিন লাভের জন্য বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জামিন চাইলে আদালত শুনানী শেষে রাসেল মেম্বার ও সিফাত কে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ও বাকি দুইজনকে জামিন প্রধান করেন আদালত। এর আগে সন্ত্রাসী ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন রোকসানা আক্তার।
তিনি বলেন, কানাইনগরের বহু অপকর্মের হোতা,মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীদের শেল্টার দাতা রাসেল মেম্বারের নির্দেশে মাদক সম্রাট ও সন্ত্রাসী সালাউদ্দিন, আলাউদ্দিন, মহিউদ্দিন ও দাদন গংরা শালিসে উপস্থিত নিরীহ লোকদের উপর দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়।
রোকসানা এজাহারে উল্লেখ করেন, বিবাদী ১। সালা উদ্দিন (৩০), ২। আলাউদ্দিন (২৭), ৩। মহিউদ্দিন (৪০), ৪। দাদন (২৭), সর্ব পিতা-মৃত আঃ কাদির, ৫। রাসেল চৌধুরী (৩৫), পিতা- মৃত সালাম চৌধুরী, ৬। রিফাত (২১), ৭। সিফাত (১৯), উভয় পিতা- মৃত আওলাদ হোসেন, ৮. রফিকুল ইসলাম (৪৫), পিতা- অজ্ঞাত ( চান মিয়ার মেয়ের জামাই), সর্ব সাং- কানাইনগর (বক্তাবলী), থানা- ফতুল্লা, জেলা সহ অজ্ঞাত নামা ৫/৬ জনদের বিরুদ্ধে এই মর্মে এজাহার দায়ের করিতেছি যে, আমার জ্যাঠাতো ভাইয়ের ছেলে হোসেন (২৮) অনুমান ১৫ দিন পূর্বে ১৭ শতাংশ জমি রাজাপুর সাকিনে জনৈক মুকুল এর নিকট বিক্রি করে। উক্ত বিবাদীরা এলাকার ভূমি দস্যু প্রকৃতির লোক তাহারা জমির দালালী করে। আমার জ্যাঠাতো ভাইয়ের ছেলে হোসেন অন্যত্র জমি বিক্রী করার কারনে তাহারা দালালী বাবদ শতাংশ প্রতি ১৫.০০০/- টাকা দাবী করে। আমার জ্যাঠাতো ভাইয়ের ছেলে হোসেন তাদেরকে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাহাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। আমার ভাই মোঃ মোতালেব (৬৫) সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি সমাধান করার জন্য ২/৯/২০২৩ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় ফতুল্লা থানাধীন কানাইনগর বেকারীর মোড়ে একটি সালিসি বৈঠকে বসে। সালিসি বৈঠক চলাকালিন সময় এক পর্যায়ে বিবাদী পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করিয়া বে-আইনী জনতা বন্ধে হাতে বগি রামদা, চাপাতি, হকিষ্টিক লোহার রড সহ অস্ত্র করে সজ্জিত হইয়া ১নং বিবাদী সালাউদ্দিন আমার বড় ভাই আব্দুল হালিম ওরফে রহমান (৫০) কে দেখা মাত্র অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
একপর্যায়ে আমার ভাইকে খুন করার উদ্দেশ্যে তাহার হাতে থাকা বগি নিয়া মাথার বাম পাশে কোপ মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। আমার ভাইয়ের চিৎকারে তাহার সঙ্গে থাকা আমার বড় ভাইয়ের ছেলে রাকিব হাসান (৩০), চাচাতো ভাই আলাল মিয়া (৪৫), ভাতিজা হোসেন (২৮), নাজমুল (২৫), আরিফ (৩৫) গন আগাইয়া আসিলে ৫নং বিবাদী বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার রাসেল চৌধুরীর হুকুমে ২নং বিবাদী খুন করার উদ্দেশ্যে তাহাদের হাতে থাকা বগি দিয়া রাকিব হাসান এর মাথায় কোপ মারিতে গেলে সে দুই হাত দিয়া প্রতিহত করিলে উক্ত কোপ তাহার দুই হাতে লাগিয়া বাম হাতের ৩টি আঙ্গুল এবং ডান হাতের ১টি আঙ্গুলে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম হয় এবং বাম হাতের ৩টি আঙ্গুল হাত থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হইয়া যায়। ঐ সময় আমার বড় ভাই আব্দুল হালিম @ রহমান আমার ভাতিজাকে রক্ষা করতে আসিলে ৩নং বিবাদী তার হাতে থাকা ধারালো বগি দিয়া তাহাকে খুন করার উদ্দেশ্যে মাথার বাম পাশে কোপ মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম করে। ৪নং বিবাদী তার হাতে থাকা ধারালো বগি দিয়া আমার ভাই আব্দুল হালিম এর ডান কাধের উপর কোপ মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ৬নং বিবাদী তাহার হাতে থাকা ধারালো বগি নিয়া আমার চাচাতো ভাই আলাল মিয়া (৪৫) এর মাথার ডান পাশে কোপ মারিয়া রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
৭ ও ৮নং বিবাদীর তাহাদের হাতে থাকা হকিষ্টিক দিয়া আমার ভাতিজা রাকিব কে এলোপাতাড়ী ভাবে পিটাইয়া নীলা ফোলা জখম করে। অন্যান্য বিবাদীগন সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা তাহাদেরকে এলোপাতাড়ী ভাবে মারধর করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফোলা জখম করে। ২নং বিবাদী আলাউদ্দিন আমার ভাতিজা রাকিব এর গলায় থাকা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন মূল্য অনুমান- ১,৪০,০০০/- টাকা ও ৪নং বিবাদী দাদন আমার ভাতিজা হোসেন এর পরনে প্যান্টের ডান পকেটে থাকা নগদ ২০,০০০/- টাকা নিয়া নেয়। তাহাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদীরা বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়া চলিয়া যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন আমার আহত ভাতিজা ও ভাইদেরকে চিকিৎসার জন্য ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল খানপুরে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের অবস্থার অবনতি দেখিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানে তাহার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
বক্তাবলী ইউনিয়নে রাসেল মেম্বার কে জেলহাজতে পাঠানোর খবর কানাইনগরে পৌছলে পরাজিত মেম্বার আব্দুর রহমান হালিমের লোকদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। মামলার বাদী রোকসানা আক্তার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রাসেল মেম্বারের লোভ লালসার কারনে শান্তি পূর্ন কানাইনগর অশান্ত হয়ে উঠেছে। আমরা ভীষন খুশি সন্ত্রাসীদের গডফাদার রাসেল মেম্বারকে জামিন না দেয়ায়।
Leave a Reply