বর্তমান নিউজ.কমঃ
# মেম্বার আব্দুল আউয়ালের ভূমিকা রহস্য জনক দোষীদের নাম শুনে চুপ করে গেলেন তিনি।
# এএসআই বাদল ও মেম্বার আব্দুল আউয়াল সহ স্থানিয়দের কথা বলে ২২ হাজার টাক নেন- বর সুমন
নারায়ণগঞ্জ জেলায় বাল্যবিবাহ রোধে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে কিন্তু কিছু লোকের জন্য তেমন কোন সুফল পাচ্ছে না শহর বাসী। বাল্যবিবাহ রোধে সরকারসহ প্রশাসনের কোন ব্যবস্থাই কাজে আসছেনা কিছু অর্থলোভী আইনজীবি, পুলিশ সদস্য,ইউপি মেম্বারসহ সমাজের কতিপয় সমাজপতিদের কারনে। অল্প বয়সে মেয়েদেরকে বিয়ে দিয়ে তাদের সুন্দর জীবনটুকু অনিশ্চয়তাসহ মৃত্যুর মুখে ফেলে দিচ্ছে। তেমনী এক বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটেছে ফতুল্লা থানাধীন ইসদাইর এলাকার। প্রায় ১২ বছরের এক কিশোরীকে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে এবং তা পাকাপোক্ত করতে ফতুল্লা ইউপি মেম্বার আবদুল আউয়াল, ফতুল্লা থানা পুলিশ এএসআই বাদল ও সমাজ পতিদেরকে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে এবং আশপাশ এলাকায় ঘুরে জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন পুর্বে ইসদাইর এলাকার সফিকুল ইসলাম ওরফে চেয়ারম্যানের ১২ বছরের কিশোরী মেয়েকে নিয়ে একই বাড়িতে বসবাসকারী সুমন পালিয়ে যায়। পরে তারা নারায়ণগঞ্জের আদালতে একজন আইনজীবির মাধ্যমে নোটারী করে আদালত পাড়ায় এক কাজির মাধ্যমে বিয়ে করেন। মেয়েকে না পেয়ে বাবা সফিকুল ইসলাম ফতুল্লা মডেল থানায় একটি নিখোজের অভিযোগও দায়ের করেন। এদিকে কোর্ট ম্যারেজের প্রায় ৪ দিন পর সুমন সেই কিশোরীকে নিয়ে এলাকায় ফিরে আসলেও বাল্য বিয়ে প্রতিরোধের পরিবর্তে উল্টো স্থানীয় রুবেল, শাহআলম , সৌরভ ও হোসেনগংরা টাকার বিনিময়ে সেই বাল্যবিয়ে পাকাপোক্ত করে কিশোরী মেয়েটিকে সুমনের সাথে সংসার করার ব্যবস্থা করে দেন। স্থানীয় রুবেল সুমনের কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা নিয়ে সেটা শাহ আলমের হাতে তুলে দিলে শাহআলম তা সবার মাঝে বন্টন করে দেন। বর্তমানে সুমন উক্ত কিশোরীকে নিয়ে সংসার করছেন। তবে বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা বলেন, সুমনের আগের একটি স্ত্রীও রয়েছেন যিনি বিদেশ থাকেন। ১২ বছরের কিশোরী মেয়ের বিয়ে নিয়ে পুরো ইসদাইর জুড়ে আলোচনা-সমালোচনা হলেও তা নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের ভুমিকা রহস্যজনক বলে জানান স্থানীয়রা। তবে এবিষয়ে মেম্বার এর কার্যালয়ে সকলে মিলে বসলে বর সুমন সব কিছু শিকার করেন যে মেম্বার ও পুলিশ এর নাম বলে তার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। আর শাহ আলম মেম্বার ও পুলিশ কে টাকা দেওয়ার কথা শিকার করে বলেন সবাই টাকা পেয়েছে এখন তারা আপনাদের সামনে শিকার করছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, স্থানীয় হোসেন,রুবেল,সৌরভ ও শাহ আলমগংরা ঘটনা শোনার পর বর সুমনকে আটক করে। পরে তারা সুমনকে বলেন, মেম্বার-পুলিশসহ অনেককে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে হবে এ মর্মে ২২ হাজার টাকা নেয়। যে টাকার ৫ হাজার মেম্বারকে,৫ হাজার পুলিশকে,সাড়ে ৩ হাজার হোসেনকে দিয়ে বাকী টাকা রুবেল এবং সৌরভ ভাগাভাগি করে নেয়। (যার অডিও কল অত্র প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে)।
এদিকে কোর্টে অ্যাড. সম্ভুনাথ সৈকত এর সহকারী মুহুরী দুলালের মাধ্যমে একজন আইনজীবিকে দিয়ে ১২ বছরের কিশোরীকে ১৮বছরের যুবতী বানিয়ে অ্যাড. নুর জাহানের মাধ্যমে নোটারী করানো হয়। পরে সেখানেই কাজি আরমানের মাধ্যমে সুমনের সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয় উক্ত কিশোরীর। ১২ বছরের কিশোরীকে কিভাবে ১৮ বছরের যুবতী করা হলো এ বিষয়ে অ্যাড. নুর জাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়ের বয়স কত সেটা আমার জানান বিষয় না। আমার কাছে একজন এ্যাডভোকেটের সহকারী নিয়ে এসেছে আমি সেটায় স্বাক্ষর ও সিল মেরেছি। নোটারী করার সময় সেই মেয়েটিকে আপনার কাছে আনা হয়েছিলো কিংবা জন্মনিবন্ধনের কোন কাগজ দেয়া হয়েছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না আমার কাছে শুধুমাত্র কাবিনের কাগজটি আনা হয়েছিলো। মেয়ে না দেখে আপনি কিভাবে বুঝলেন এটা কিশোরী না যুবতী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমাকে টাকা দিয়েছে আমি স্বাক্ষর দিয়েছি।
এ বিষয়ে সুমনের কাছে টাকা গ্রহনকারী মো.রুবেলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ভাই আমার ফোন নাম্বার আপনারে কে দিছে। একজনে একটা কথা কইলো আর আপনে সেটা বিশ^াস করলেন। আপনে সামনা-সামনি আসেন আপনার সাছে কথা বলবো। আমার মান-ইজ্জত যদি নষ্ট করতে আপনে নিউজ লেখেন তাইলে লেখেন।
এ বিষয়ে ফতুল্লা ইউপির ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার আবদুল আউয়ালের সাথে যোগাযোগ করা হলে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,আমি বাল্যবিবাহ রোধে সোচ্চার। মেয়েটির বাবা থানায় অভিযোগ করলে এএসআই বাদল ভাই এসেছিলেন কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। ওরা তো এখন সংসার করছে,বাল্য বিয়ে কিভাবে হলো এবং তা প্রতিরোধে আপনার ভুমিকা কি ছিলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওরা কবে এলাকায় এসেছে তা আমি জানিনা। তবে তার নাম বলে যারা টাকা নিয়েছে সেটা বলতে চুৃপ করে যান মেম্বার সাহেব বলেন তাদের চেনা চেনা লাগে কিন্তু আমি চিনি না।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক মো.বাদল এর মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়ের বাবা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওখানে গিয়েছিলাম কিন্তু কাউকে পাইনি। আমি তাদেরকে বলেছি যে,যদি ওরা আসে তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে। ওরা আমার সাথে আর যোগাযোগ করেনি। ওরা যদি বলতো মামলা নিতে আমি মামলা নিতাম। আমি কোন টাকা নেই নাই এগুলা সব মিথ্যা।
Leave a Reply