বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা’ স্লোগানকে সামনে রেখে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি ও মুক্ত আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী ‘জাতীয় কবিতা উৎসব-২০২৩’ শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে শুরু হয় জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত এ উৎসব।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কবি আসাদ চৌধুরী। কবিতা উৎসবে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন আমিনুর রহমান সুলতান। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তব্য দেন জাতীয় কবিতা উৎসবের আহ্বায়ক শিহাব সরকার ও সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত। শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর একুশের গান ও উৎসব সংগীতের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন এবং শিল্পাচার্য কামরুল হাসানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। এখন আমাদের সমাজ ও সাহিত্যের উন্নতি দরকার। আমরা জাতি হিসেবে দিন দিন লোভাতুর হয়ে যাচ্ছি! এখন আমাদের ভাবতে কষ্ট হয়, আমরা ভাষা আন্দোলন করেছি, মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কিন্তু লোভ ছাড়তে পারছি না।’ তিনি বলেন, ‘কাগজের দাম অনেক বেড়ে গেছে। এভাবে বাড়তে থাকলে দেশের কবি, সাহিত্যিকরা হারিয়ে যাবে, কিছু লিখতে পারবে না; পাঠক কিছু জানবে না। কাগজের দাম কমলে জ্ঞানীদের কাছ থেকে আমরা জ্ঞানের কথা জানতে পারব।’
সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, সব সুন্দরের শ্রেষ্ঠ সুন্দর হলো কবিতা। তাই তুলনা করতে গিয়ে আমরা বলি, গল্প বা উপন্যাসটি যেন একটি সুন্দর কবিতা। রূপসী মেয়েটি দেখতে ঠিক যেন একটি নিটোল কবিতা। একটি সুন্দর বক্তৃতাকে তাৎক্ষণিক তুলনা করি অসাধারণ কবিতা বলে। ইতিহাসের প্রবল ঘটনা বা বিজয়ের কাহিনিকে বলি মহাকাব্য। শিল্প-সুষমায় সমৃদ্ধ এই কবিতা, কাব্য বা মহাকাব্যের স্রষ্টা হলেন কবি। এ কবি সর্বশ্রেষ্ঠ ও সার্বভৌম মানুষ।
প্রথম দিন রাত ৯টা পর্যন্ত চলে উৎসব। উৎসবে দেশে কবিরা ছাড়াও ভারত, ভুটান, নেপাল, অস্ট্রিয়া ও ইরান থেকে আমন্ত্রিত কবিরা অংশ নেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দ্বিতীয় দিনের উৎসব শুরু হবে। যথারীতি থাকবে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, সেমিনার ও মুক্ত আলোচনা।
Leave a Reply