চোখ ওঠার সমস্যা নিয়ে গতকাল সোমবার জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন বাবুল মিয়া। উপজেলার পূর্ব কাজলাপাড়ার এ বাসিন্দা জানান, বর্তমানে তিনিসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য ভুগছেন এ সমস্যায়। শুরুতে তাঁর বড় ভাই রেজাউল ইসলাম এতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। পর্যায়ক্রমে বাকি সদস্যরাও ছোঁয়াচে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ অবস্থা উপজেলার প্রায় প্রতি গ্রামে। অন্যান্য বছর এ মৌসুমে চোখ ওঠার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও চলতি বছর বেশি মাত্রায় দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। এরই মধ্যে রোগীরা ওষুধ সংকটে আরও বিপাকে পড়েছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, তাঁরা আক্রান্তদের আলাদা থাকার পরামর্শ দিলেও অনেকে মানছেন না।
সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা খোলাবাড়ীর মেহেদী হাসান বলেন, হাসপাতালে চোখ ওঠা রোগের ভালো চিকিৎসা মিলছে না। চিকিৎসকরা ড্রপ লিখে দিয়েই দায় সারছেন। হাসপাতাল বা ওষুধের দোকানেও রোগীর অনুপাতে মিলছে না ওষুধ।
অনেক রোগীকে ওষুধ ছাড়াই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে বলেও জানান মেহেদী। এ অবস্থায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চিকিৎসকরা তাঁদের কালো চশমা পরে বাড়িতে অবস্থানের পরামর্শ দিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উপজেলায় কত মানুষের মধ্যে এ রোগ ছড়িয়েছে, সে সম্পর্কে সঠিক পরিসংখ্যান জানা যায়নি। তবে হাসপাতাল সূত্র জানায়, এ সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়েছে। তাঁদের বেশিরভাগ হাসপাতালে না এসে স্থানীয়ভাবে ওষুধ কিনে ব্যবহার করছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এর বিস্তার ঘটছে।
পাথরের চরের আব্দুল জব্বার বলেন, প্রথমে তাঁর ভাইয়ের চোখ ওঠেছিল। চিকিৎসক না দেখিয়ে বাজারের দোকান থেকে ড্রপ এনে ব্যবহার করেন। তারপর অন্যরাও আক্রান্ত হন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. বিপুল মিয়া জানান, এ রোগে চোখের পাতা ফুলে যায়। চোখ জ্বালাপোড়া করে, পানি পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চোখ থেকে মিশ্র বর্ণের আঠালো পদার্থ বের হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব জানান, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এ রোগকে কনজাঙ্কটিভাইটিস বলা হয়। এর বিস্তার ঠেকাতে আক্রান্ত ব্যক্তি ৭-১৪ দিন বাড়িতে নিরাপদে অবস্থান করবেন।
Leave a Reply