বর্তমান নিউজ.কমঃ
মো.রাজু প্রধান। কাশিপুর ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিয়াজ প্রধান ও পারভীন দম্পত্তির দুই ছেলের মধ্যে রাজু প্রধান এখন উক্ত ওয়ার্ডবাসীর কাছে আতংকের একটি নাম। যে নামটি শুনলে সাধারন মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টি হওয়া ছাড়া অন্য কিছুই না। বাবা রিয়াজ প্রধান, মাতা পারভীন আক্তার ও চাচা সফিকুল প্রধানের অনৈতিক প্রেরনায় রাজু প্রধান এখন কাশিপুর নুর মসজিদসহ আশপাশ এলাকায় আতংকিত ব্যক্তির নামে পরিচিত। মাদক, সন্ত্রাস, চুরি-ছিনতাই, জবর-দখল, নারাী দিয়ে দেহ ব্যবসাসহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা রাজু প্রধানের দ্বারা সংগঠিত হয়নি।
নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি থানায় প্রায় ২৩টি মামলা রয়েছে এ আতংকিত রাজু প্রধানের বিরুদ্ধে পাশাপাশি বাবা রিয়াজ প্রধানের বিরুদ্ধে রয়েছে প্রায় ৮টি মামলা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক বাসিন্দা জানান, গুটি কয়েক বিশেষ পেশার ব্যক্তি ও অর্থলোভী কিছু পুলিশের সখ্যতায় রাজু প্রধান এখন স্থানীয় সকলের কাছে আতংকের একটি নাম। এরুপ কৃত কর্মের জন্য প্রায় ৮ বছর পুর্বে বন্দরের মদনগঞ্জ থেকে রাতের আধারে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলো রিয়াজ-পারভীন দম্পত্তি। দেওভোগ নুর মসজিদ এলাকায় আগমনের কয়েকদিন পর থেকেই শুরু বাবা-মা ও চাচার নির্দেশে রাজুর মাদক ব্যবসা ও অপরাধের সা¤্রাজ্যের বিস্তার। গড়ে তোলা বিশাল বাহিনী। যে বাহিনীর মাধ্যমে এলাকায় মাদক বিক্রি,চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ,জবর-দখলসহ নানা প্রকার অপকর্ম। এলাকাতে রাজুর অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই শুরু হতো তার বাহিনীর মাধ্যমে অত্যাচারের ষ্টীম রোলার। পাশাপাশি সেই বিশেষ পেশার ব্যক্তি প্রশাসনের কতিপয় কর্তাদেও দিয়ে দেখানো হতো বিভিন্ন প্রকার ভীতি। তারা আরও বলেন,অতিরিক্ত নেশার ফলে সাজু ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ায় অপরাধ জগত থেকে কিছুটা দূরে রইলেও তার অপরাধ জগতের অন্যতম সদস্য ভাই রাজু প্রধানের অপরাধ সা¤্রাজ্য বন্ধ হয়নি বরং কতিপয় সাংবাদিক ও পুলিশের কিছু অর্থলোভী সদস্য’র আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এতটাই বেপরোয়া হয়ে পড়েছে যে রাজু প্রধানের অপরাধ জগত ভাঙ্গতে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার এমনকি থানা পুলিশও অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে। একের পর এক অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে গেলেও যেন লাপাত্তাই রয়েছে কাশিপুর ৭নং ওয়ার্ডের নুর মসজিদ ও আশপাশ এলাকার মুকুটহীন অপরাধ জগতের স¤্রাট রাজু প্রধান।
রবিউল নামে এক ব্যক্তি জানান, নুর মসজিদ এলাকায় প্রায় ৮টি বাড়ির মালিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজু প্রধান তার বাহিনীর দিয়ে ফস কোয়াটার (মাদক ও নারী নিয়ে ফুর্তি) গড়ে তোলে। যার ফলে এলাকার অনেকেই তাদের সন্তানদের নিয়ে অনেকটা শংকার মাঝে দিনানিপাত করছেন। অনেক বাড়ির মালিক নিজ বাড়ি ভাড়া দিয়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্র ভাড়া বাড়িতেও উঠেছেন। বাড়ি ছেড়েও তাদের মাঝে শংকা বিরাজ করছে কারন রাজু প্রধান উক্ত বাড়িগুলো ভাড়া টাকা নিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি স্থানীয়রা রাজু নেতৃত্বে গড়ে উঠা ৮টি ফস কোয়াটার থেকে ৪টি উদ্ধার করলেও বাকী ৪টি এখনও উদ্ধার করতে পারেনি।
এদিকে আবারো হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে উঠা রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, এলাকার ইন্টারনেট ব্যবসা, ড্রেন নির্মাণ এবং সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবসাও একক নিয়ন্ত্রণ করতো রাজু প্রধান ও তার সঙ্গীরা। একেবারেই স্লো নেট লাইন, টেকসই বিহীন ড্রেন নির্মাণ ও ওজনে কম দেয়া সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসা স্থানীয়দের অতিষ্ঠ করে তুলেছে। যদি কেউ রাজুর কাছ থেকে এগুলো সংগ্রহ না করতো তাহলে তাদের উপর নেমে আসতো নির্যাতনের স্টিম রোলার।
তারা আরও বলেন, রাজু প্রধান ৭ নং ওয়ার্ডের নুর মসজিদ এলাকায় ৩০/৩৫ জন বিপথগামী ছেলে নিয়ে গড়ে তুলেছে অপরাধের বিশাল সা¤্রাজ্য। যে গ্রুপটি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই মাদক বিক্রি, জমি দখল ও বাড়ি দখলসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা তাদের দ্বারা সংগঠিত হয়না।
গত কয়েকদিন যাবত এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর সদস্যরা যাকে শায়েস্তা করতে এলাকাবাসী তো দুরের কথা খোদ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষেও সম্ভব হয়ে দাড়াচ্ছেনা। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত, ফতুল্লা মডেল থানার একাধিক পুলিশ সদস্যদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে মাসোহারা দিয়েই রাজু প্রধান তার বাহিনী দিয়ে এলাকাতে নতুনভাবে অপরাধের সা¤্রাজ্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ১লা সেপ্টেম্বর ভোলাইলে পূর্ব শত্রুতার জেরে মাকসুদা বেগম (৩৫) এক নারীকে হত্যার চেষ্টাও চালায় রাজুর বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় ভুক্তভোগীর স্বামী রিয়াজ আলী বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে অভিযোগটি দায়ের করেন।
স্থানীয় অনেকেই বলছেন, এ যেন শর্ষের ভেতরে ভুতের অবস্থান। অর্থ্যাৎ থানা পুলিশের কিছু অর্থলোভী সদস্যদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে নুর মসজিদ ও আশপাশে বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছে রাজু প্রধান ও তার বাহিনী। যার ফলে পুলিশ রাজুকে সঙ্গীয়সহ আটক করছে পারছেনা পুলিশ। কারণ অপারেশনের আসার আগেই হয়তোবা রাজুর কান পর্যন্ত পৌছে যায় পুলিশি অভিযানের সংবাদ। যার ফলে দ্রুত সটকে যেতে পারে রাজু প্রধান গং। সূত্র.এফএনএ রিপোর্ট
Leave a Reply