বর্তমান নিউজ.কমঃ
কাশিপুর ইউপির ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিয়াজ প্রধানের দুই ছেলে রাজু ও সাজু প্রধান। অতিরিক্ত নেশার ফলে সাজু ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ায় অপরাধ জগত থেকে কিছুটা দূরে রইলেও তার অপরাধ জগতের অন্যতম সদস্য ভাই রাজু প্রধানের অপরাধ সামরাজ্য বন্ধ হয়নি বরং কতিপয় সাংবাদিক ও পুলিশের কিছু অর্থলোভী সদস্য’র আশ্রয়-প্রশ্রয়ে এতটাই বেপরোয়া হয়ে পড়েছে যে রাজু প্রধানের অপরাধ জগত ভাঙ্গতে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার এমনকি থানা পুলিশও অনেকটা হিমশিম খাছে। একের পর এক অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে গেলেও যেন লাপাত্তাই রয়েছে কাশিপুর ৭নং ওয়ার্ডের নুর মসজিদ ও আশপাশ এলাকার মুকুটহীন অপরাধ জগতের সম্রাট রাজু প্রধান।
সূত্রমতে জানা যায়, রিয়াজ প্রধানের ছেলে রাজু প্রধানের বিরুদ্ধে ফতুল্লা ও সদর মডেল থানায় নামীয় প্রায় ১৩টি মামলা এবং নাম পরিবর্তন করে আরো প্রায় ৬টি মামলা রয়েছে। এতগুলো মামলা থাকার পরও পুলিশ প্রশাসন কেনইবা রাজুকে তার সঙ্গীয়সহ গ্রেফতার করছে না তা নিয়ে স্থানীয়দের ভিন্নমত। তাদের দাবী থানা পুলিশের কতিপয় সদস্য নিয়মিতভাবে রাজু প্রধানের অপরাধ জগত থেকে মাসোহারা নিতো বলে অত্র এলাকায় রাজুর অপরাধ নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হলে উল্টো বাদীকেই বিভিন্নভাবে হুমকী প্রদান করা হতো। রাজু প্রধানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কয়েকমাস পুর্বে র্যাব-পুলিশসহ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সুরাহা পায়নি। গত সপ্তাহে নুর মসজিদ এলাকায় এক সমাবেশে স্থানীয় এক বক্তা বলেছিলেন যে, রাজু অপরাধ জগত থেকে কে বা কারা মাসোহারা নিয়ে ওকে নিয়মিত শেল্টার দিতো। সেখানে কয়েকজন পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জুয়েল ও বাবুসহ আরো ২ জন বিশেষ পেশার ব্যক্তি নাম উল্লেখ করেছিলো।
এদিকে আবারো হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে উঠা রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগী। নাম প্রকাশে অনি”ছুক অনেকেই বলেন, এলাকার ইন্টারনেট ব্যবসা, ড্রেন নির্মাণ এবং সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবসাও একক নিয়ন্ত্রণ করতো রাজু প্রধান ও তার সঙ্গীরা। একেবারেই স্লো নেট লাইন, টেকসই বিহীন ড্রেন নির্মাণ ও ওজনে কম দেয়া সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসা স্থানীয়দের অতিষ্ঠ করে তুলেছে। যদি কেউ রাজুর কাছ থেকে এগুলো সংগ্রহ না করতো তাহলে তাদের উপর নেমে আসতো নির্যাতনের স্টিম রোলার।
তারা আরও বলেন, রাজু প্রধান ৭ নং ওয়ার্ডের নুর মসজিদ এলাকায় ৩০/৩৫ জন বিপথগামী ছেলে নিয়ে গড়ে তুলেছে অপরাধের বিশাল সামরাজ্য। যে গ্রুপটি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই মাদক বিক্রি, জমি দখল ও বাড়ি দখলসহ এমন কোন অপরাধ নেই যা তাদের দ্বারা সংগঠিত হয়না।
গত কয়েকদিন যাবত এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর সদস্যরা যাকে শায়েস্তা করতে এলাকাবাসী তো দুরের কথা খোদ পুলিশ প্রশাসনের পক্ষেও সম্ভব হয়ে দাড়াছেনা। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত, ফতুল্লা মডেল থানার একাধিক পুলিশ সদস্যদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে মাসোহারা দিয়েই রাজু প্রধান তার বাহিনী দিয়ে এলাকাতে নতুনভাবে অপরাধের সামরাজ্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালা”েছ। গত ১লা সেপ্টেম্বর ভোলাইলে পূর্ব শত্রুতার জেরে মাকসুদা বেগম (৩৫) এক নারীকে হত্যার চেষ্টাও চালায় রাজুর বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় ভুক্তভোগীর স্বামী রিয়াজ আলী বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে অভিযোগটি দায়ের করেন।
সেই ঘটনায় থানা পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও অপরাধের মুলহোতা রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর সদস্য সাল্লু ও মুসলিম গংদের গ্রেফতার করতে পারেনি। যার ফলে প্রতিদিনই রাজু বাহিনীর সদস্য নুর মসজিদ এলাকায় তাদের অপরাধের তান্ডব চালাছে। এতে ক্ষতিগ্র হচ্ছেন রাস্তা উভয় পাশে থাকা দোকান মালিকরা। এতকিছুর পরও থানা পুলিশ কর্তৃক সন্ত্রাসী রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার না করায় স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
স্থানীয় অনেকেই বলছেন, এ যেন শর্ষের ভেতরে ভুতের অবস্থান। অর্থ্যাৎ থানা পুলিশের কিছু অর্থলোভী সদস্যদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে নুর মসজিদ ও আশপাশে বিভিন্ন অপকর্ম চালাছে রাজু প্রধান ও তার বাহিনী। যার ফলে পুলিশ রাজুকে সঙ্গীয়সহ আটক করছে পারছেনা পুলিশ। কারণ অপারেশনের আসার আগেই হয়তোবা রাজুর কান পর্যন্ত পৌছে যায় পুলিশি অভিযানের সংবাদ। যার ফলে দ্রুত সটকে যেতে পারে রাজু প্রধান গং।
আবদুল নামে জনৈক ব্যক্তি জানান, এলাকাতে এমন কোন অপকর্ম নেই যা রাজু প্রধান ও তার বাহিনী দ্বারা হয়নি। মাদক, সন্ত্রাস, দেহ ব্যবসা, জমি দখল, বাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা,বাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ে টাকা আদায়, নতুন বাড়ি নির্মাণে তার কাছ থেকে বাধ্যগতভাবে নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় (তার মনগড়া দামে), চুরি ও ছিনতাইসহ নানা অপকর্ম।
তারা আরও বলেন, আমরা তো সামান্য ভাড়াটিয়া কিংবা বাড়ির মালিক। এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, পঞ্চায়েত কিংবা পুলিশও পারছেনা রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর অত্যাচার থেকে ৭নং ওয়ার্ডবাসীকে রক্ষা করতে। তাহলে কি রাজু প্রধান তাদের সকলের চেয়েই প্রভাবশালী। আমরা স্থানীয়রা অনতিবিলম্বে রাজু প্রধান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবা গ্রহনে জেলা পুলিশ সুপার ও র্যাবের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সূত্র, এফএনএ রিপোর্ট :
Leave a Reply