বর্তমান নিউজ.কমঃ
নারায়ণগঞ্জে সোনারগা উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের কোবাগা এলাকায় চারটি সংখ্যালগু পরিবারের সদস্যদের ভিটেমাটি ছাড়া করার জন্য হুমকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে একটি শিল্প কারখানার মালিক। এ বিষয়ে ওই পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না প্রশাসন। এতে ওই পরিবারগুলোর সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
ভুক্তভুগেীরা জানান জামপুর ইউনিয়নের কোবাগা এলাকার বাসিন্দা রাখাল দাস, গোপালদাস, মৃতু প্রাণ বল্লবের ছেলে বসুদেব ও সুদেব, মৃতু রাধা বল্লবের ছেলে প্রদিব বল্লবের মালিকাধীন ২৯শতাংশ জাগায় চারটি পরিবার বসবাস করে আসছেন। ওই এলাকায় সিগমা অয়েল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সঞ্জিৎ মন্ডল ওই পরিবারগুলোর শেষ সম্ভল ভিটে মাটিটুকু দখল করে নেওয়ার জন্য তাদের মিথ্যা মামলা ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে ওই পরিবারের প্রায় ত্রিশ পয়ত্রিশ জন সদস্য প্রাণের ভয়ে সবসময় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। ওই প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত সন্ত্রাসীরা জাগা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করছে।
রোববার সরজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে কথা হয় রাখাল দাসের সাথে তিনি বলেন, আমাদের বাবদাদার সম্পত্তিতে ঘরাবড়ি নির্মান করে ছেলেপুলে নিয়ে বসবাস করে আসছি। সম্প্রতি সিগমা ওয়েল মিলের ম্যানেজার সঞ্জিৎ মন্ডল ও ভূমি দস্যু শহিদুল ইসলাম আমাদের শেষ সম্ভলটুকু কেড়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমরা ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও কোন সূরাহ পাচ্ছি না। রাদা বল্লব বলেন, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে দিব। তবুও বাব দাদার শেষ সম্ভল ভিটে মাটি ছেড়ে দিব না। জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও আমাদের ভিটেমাটি রক্ষা করব আমরা।
গীতা মন্ডল জানান, একটি ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় পরিবেশে ছাড় পত্র ছাড়া কিভাবে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাদের শক্তিশালী জেনারেটরের শব্দে আমরা ঠিকমত ঘুমাতে পারি না। তাই অভিলম্ভে এই কারখানাটি অন্যত্র স্থানান্তর করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
তারামনি জানান, আমরা সংখ্যালগু পরিবারের সদস্য বলে আমাদের কোন দাম নেই। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন ন্যায় বিচারক। আমরা তার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আমাদের বাড়িঘর রক্ষা করার জন্য আমরা আজিবন চেষ্টা করে যাব।
সোনারগাঁ আইডিয়াল স্কুলের ২য় বর্ষের ছাত্রী জয়ন্তিরানি দাস জানান, তাদের কারখানার জেনারেটরের প্রচন্ড শব্দে আমাদের লেখাপড়ার খুব সমস্যা হয়। তাই কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
এলাকাবাসী জানান, ইডসিগমা ওয়েল ইন্ডাষ্ট্রিজের ম্যানেজার সঞ্জিৎ মন্ডল ও তর সহযোগি ও তার সহযোগি, ভূমিদস্যু শহিদুল ইসলাম এলাকার নিরিহ লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে থাকে।
এ বিষয় জানতে চাইলে সিগমা ওয়েল মিলের ব্যবস্থাপক রঞ্জিৎ মন্ডলকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করা হলো তাকে পাওয়া যায়নি।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া জানান, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটি কোণ ভাবেই লাইসেন্স নবায়ন করতে দেওয়া হবে না।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাআতিকুর রহমান জানান, সংখ্যালগু পরিবারে সদস্যদের হয়রানি করা যাবে না। ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় কিভাবে কারখানা পরিচালনা করছে এবিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্র, এফএনএ রিপোর্ট :
Leave a Reply