টাঙ্গাইল শহরের সৃষ্টি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শিহাব মিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় স্কুলটির ছয় শিক্ষকের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামীয় আরও ৮/১০ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে নিহত স্কুলছাত্র শিহাবের মা আছমা আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। নিহত শিহাব সখীপুর উপজেলার বেরবাড়ী গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের ছেলে।
গত ২০ জুন সন্ধ্যায় পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শিহাব মিয়ার মরদেহ সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়। ২১ জুন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে শিহাবের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে আসছিল। কিন্তু পরিবার দাবি করে, এটি পরিকল্পিত হত্যা। পরে গত রোববার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এদিকে শিহাব হত্যার বিচারের দাবিতে সোমবার দুপুরে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে তার সহপাঠীরা। এ সময় তারা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়।
এছাড়াও শিহাব হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। হত্যাকারীর কঠোর শাস্তি চেয়ে বহু লোকজন সেখানে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন বলেন, এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়তে আসে, মরতে নয়। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
নিহত শিহাবের বাবা ইলিয়াছ হোসেন সমকালকে বলেন, কোনো নিরপরাধ সন্তান যেন আর হত্যার শিকার না হয় আমি সেই দাবি জানাই।
সৃষ্টি স্কুলের ছাত্র তানজিম হেসেন বলেন, আমরা স্কুলে লেখাপড়া করতে এসেছি। অনেক সময় শিক্ষকরা অমানবিক অত্যাচার করেন। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
দশম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। এছাড়াও তাদের শাস্তি চাই।
টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, নিহত স্কুলছাত্রের মা বাদী হয়ে সন্ধ্যায় মামলা করেছেন। শিক্ষক আবু বকর ও নাসিরকে গত রোববার আটক করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নাসিরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আসামিদের তালিকায় আবু বকরের নাম থাকায় তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া বাকি আসামিদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে।
Leave a Reply