অনিশ্চিত জীবনের শঙ্কা কাটিয়ে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ দেওয়া ঘরে তারা শান্তি খুঁজে নিয়েছিলেন। তবে বছর না ঘুরতেই তারা এখন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। টানা এক সপ্তাহের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানি তাদের ঘরের ভেতর ঢুকে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে উপজেলার আশরাইল গ্রাম, কুন্ডা, ভলাকুট, নাসিরনগর সদর, গোকর্ণ, পূর্বভাগ ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রায় ১২০ পরিবার। ডুবে গেছে উপজেলার আরও কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের চলাচলের রাস্তা।
আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের অভিযোগ- নিচু স্থানে ঘর তৈরি করায় অল্প বর্ষাতেই ঘরের ভেতর পানি ঢুকেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি হয়ে থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের কোনো লোক তাদের খোঁজখবর নেয়নি। এমনকি তাদের জন্য কোনো ত্রাণের ব্যবস্থাও করা হয়নি। এদিকে কুন্ডা, ধরমন্ডল ও ভলাকুট আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো রয়েছে বন্যায় কবলিত হওয়ার ঝুঁকিতে। ঝুঁকিপূণ ওইসব আশ্রয়ণ প্রকল্পে যাওয়ার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক এরই মধ্যে পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা তাজ মালা বেগম বলেন, ‘ছয় দিন ধইরা পানির মইধ্যে থাকতাছি। কিন্তু আমরা কী খাই, কী করি এই খবর কেউ নিছে না। আমরা পোলা-মাইয়া লইয়া কই যামু বুঝতাছি না।’
মো. আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, ‘কোনো খাওয়া-দাওয়া নাই। গরু-বাছুর লইয়া আছি মহা বিপদে। ঘরের ভিতর ঘুমাইতে পারি না। চারদিকে পানি আর পানি। এই বিপদের মধ্যেও গরিব মানুষের কোনো খবর নিছে না কেউ। আমরা পানিত ভাসলে কার কিতা আসে যায়!’
ছালমা আক্তার নামে একজন বলেন, ‘ঘরে খাওন নাই। কাম-কাজও নাই। পরিবার নিয়া কই যামু আল্লাই ভাল জানে।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রতিটি আশ্রয়ণে যাচ্ছি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি। যাদের ত্রাণ প্রয়োজন আমরা তা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোনাব্বর হোসেন বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় যাচ্ছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছি আমরা।
Leave a Reply