কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবর্তমানে যিনি বিএনপি চালাবেন সেই তারেক রহমান লন্ডনে বসে ভোগবিলাস করছেন, রিমোট কন্ট্রোলে দল চালাচ্ছেন। আর সেই রিমোট কন্ট্রোলে দল চালিয়ে, হুমকি দিয়ে আওয়াজ তুলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ক্ষমতায় আসতে হলে মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষের দুঃখ কষ্টের সঙ্গী হতে হবে।
রোববার সকালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বিএডিসি খামারে সয়াবিন, ভুট্টা ও সূর্যমুখীর মাঠ পরিদর্শন এবং কৃষকদের সাথে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো পর্দার অন্তরালে ষড়যন্ত্র করে নীলকুঠি, লালকুঠিতে বসে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে নি। আমাদের ভিত্তি জনগণ, আমরা জনগণকে নিয়ে এগোচ্ছি, জনগণ যদি আমাদের প্রত্যাখ্যান করে আমরা চলে যাব; এটা নিয়ে আমাদের কোনো দুঃখ নেই।
তিনি বলেন, এ বছর বোরোতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। হাওরে ও সারাদেশে বৈরি আবহাওয়ায় যা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা সামান্য। বোরোতে আশানুরূপ ফলন পাবো। ফলে চালের দামে প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।
বিএডিসি‘র চুক্তিবদ্ধ চাষীদের সয়াবিন বীজ ফসলের মাঠ পরিদর্শনকালে মন্ত্রী চরাঞ্চলে অবস্থিত অনাবাদি পতিত জমিতে তেল জাতীয় ফসল সয়াবিন, সুর্যমুখী ও সরিষার আবাদ বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেন।
মন্ত্রী বলেন, একদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ অন্যদিকে ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় মিলাররা বেশি বেশি করে ধান কিনছে। সেজন্য ভরা মৌসুমেও চালের দাম কমছে না।
ড. রাজ্জাক বলেন, খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই ও আরও মজবুত করতে হলে চরাঞ্চল, উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকা, পাহাড়ি প্রতিকূল এলাকার জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। কোনো জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। পতিত জমিতে যারা চাষ করবে তাদেরকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, তেল জাতীয় ফসল আবাদে উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি। এ বিষয়ে কৃষিবান্ধব শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বীজ, সার, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়া হবে।
চাষিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীর অনাবাদী পতিত জমিগুলোকে আবাদের আওতায় আনতে আউশ ধানের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে আমাদের বিজ্ঞানীরা । আপনারা স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন অধিক ফলনশীল এ জাতগুলো রবি ফসল কর্তনের পরপরই আবাদ করবেন। চাষাবাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সহযোগিতা দিতে বিএডিসি বীজ, সার ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে। জাতগুলো কৃষকের কাছে সম্প্রসারণের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করছে।
এ সময় কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, সুগারক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, বিএডিসির সুবর্ণচর প্রকল্পের পরিচালক আজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply