আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পোশাকের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অংশ ১০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। বর্তমানে বাংলাদেশের হিস্যা সাত শতাংশের কাছাকাছি। নতুন লক্ষ্য অর্জনে একটি রোডম্যাপ বা পথনকশা তৈরি করছে সংগঠনটি। এ জন্য উচ্চমূল্যের নন-কটন পণ্য উৎপাদনে বিশেষ সহায়তাসহ সরকারের কাছে আরও কিছু নীতিসহায়তা চায় তারা। এ ছাড়া অন্যান্য বিদ্যমান নীতিসহায়তা আরও পাঁচ বছর অব্যাহত রাখারও দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এসব বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গত বছর তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অংশ ছিল ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি বছর ৭ এবং আগামী বছর সাড়ে ৭ শতাংশে দাঁড়াবে এ অংশ। এ ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অংশ ১০ শতাংশে পৌঁছাবে। লক্ষ্য অর্জনে রোডম্যাপের অংশ হিসেবে উচ্চমূল্যের পোশাক উৎপাদনে নতুন বিনিয়োগ করছেন উদ্যোক্তারা। পণ্য এবং রপ্তানি বাজারে বৈচিত্র্য আনতে কাজ করছেন তারা। ন্যায্য দর আদায়ে ব্র্যান্ড এবং ক্রেতা প্রতিনিধিদের সঙ্গে দরকষাকষিতে আপস না করার জন্য বিজিএমইএর সদস্যদের বলা হয়েছে।
ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন এবং মেইড ইন বাংলাদেশ সপ্তাহের লোগো উন্মোচন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশনের (আইএএফ) মহাসচিব ম্যাথিজিস ক্রাইতি ও বাংলাদেশে সংস্থার সদস্য বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে এহসান শামীম।
ফারুক হাসান বলেন, গত এক বছর ধরে পোশাক রপ্তানি এবং পণ্যের দর বেড়েছে। তবে যে হারে কাঁচামালের দর বেড়েছে সে হারে পোশাকের দর বাড়েনি। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির চাপ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ ধারাবাহিকতা নিয়ে শঙ্কা আছে। কয়েকজন ক্রেতা রপ্তানি আদেশ নিশ্চিত করতে সময় নিতে চান। তারা বাজার চাহিদা পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আইএএফ মহাসচিব বলেন, পোশাকের বিশ্ববাজারে চীনের অংশ কমছে। চীনের বাজার দখলে নেওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। এ মুহূর্তে পোশাক পণ্যের দর বাড়ানো হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর কৌশল। এ ছাড়া সঠিক সময়ে সঠিক পণ্য সরবরাহ করাটাও গুরুত্বপূর্ণ। এসব জায়গায়ই এখন বিনিয়োগ প্রয়োজন। দর বাড়াতে আইএএফের ভূমিকা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্রেতা গ্রুপের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন তারা।
ফজলে শামীম এহসান বলেন, ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশনে সারাবিশ্ব থেকে দুই শতাধিক ক্রেতা যোগ দেবেন। তারা উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবেন।
আগামী ১২ থেকে ১৮ নভেম্বর মেইড ইন বাংলাদেশ উইক। বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে অনুষ্ঠেয় সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূলত মেইড ইন বাংলাদেশ উইকের অংশ হিসেবেই ওয়ার্ল্ড ফ্যাশন কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে।
Leave a Reply