এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের সর্বনিম্ন খরচ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেলে সর্বনিম্ন খরচ হবে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা।
আজ বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল।
তিনি জানান, এ বছর হজে যেতে সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ ও বেসরকারিভাবে একটি প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। আজ সচিবালয়ে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়।
ঘোষিত প্যাকেজ অনুযায়ী এবার প্রত্যেক হজযাত্রীর খরচ বেড়েছে লাখ টাকারও বেশি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্যাকেজ-১ এ হজে যেতে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা খরচ হবে। এই প্যাকেজের যাত্রীরা মসজিদুল হারামের ১০০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে থাকবেন। প্যাকেজ-২ এ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে একটি প্যাকেজে খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৩০ টাকা।
তিনি জানান, একটি হজ এজেন্সি কমপক্ষে ১০০ জন এবং সর্বোচ্চ ৩০০ জন হজযাত্রী পাঠাতে পারবে। হজ এজেন্সি ছাড়া অন্য কোনো এজেন্সির কাছে হজযাত্রীর বিমান টিকিট বিক্রির জন্য অনুমতি দেওয়া যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে ধর্মমন্ত্রী বলেন, আগামী ৮ জুলাই সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বি-পাক্ষিক হজচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ পাবেন। হজযাত্রীর বিমান ভাড়া, সৌদি আরবের বাড়ি ভাড়া, সার্ভিস চার্জ, মুয়াল্লিম ফি, জমজমের পানি, খাবার খরচ এবং অন্যান্য ফি হিসাব করে ২০২২ সালের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য ২টি প্যাকেজ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার এজেন্সিগুলোর জন্য একটি প্যাকেজের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়াও হজযাত্রীদের কোরবানি বাবদ প্যাকেজ মূল্যের অতিরিক্ত ৮১০ সৌদি রিয়াল বা ১৯ হাজার ৬৮৩ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
হজের ব্যয় বাড়ছে প্রতিবছরই : তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হজের ব্যয় বাড়ছে প্রতিবছরই। ২০২০ সালে সরকারের সর্বশেষ ঘোষিত হজ প্যাকেজ-১ ছিল চার লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২ ছিল তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ-৩ ছিল তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা। ২০১৯ সালের প্যাকেজ-১ ছিল চার লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা, ২০২০ সালে বাড়ানো হয় সাড়ে ছয় হাজার টাকা। ২০১৯ সালে প্যাকেজ-২ ছিল তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকা, ২০২০ সালে বেড়েছে ১৬ হাজার টাকা। ২০১৮ সালে প্যাকেজ-১ ছিল তিন লাখ ৯৭ হাজার ৯২৯ টাকা। প্যাকেজ-২ এ তিন লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা। এর আগে ২০১৭ সালে প্যাকেজ-১ ছিল তিন লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা, ২০১৬ সালে তিন লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং ২০১৫ সালে ছিল তিন লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৫ টাকা।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, আলোচনা করে সবার সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সৌদি সরকারের খরচের বিষয়ে তিনি বলেন, বৈঠক পর্যন্ত দেখি তারা জানায় কিনা। না জানালে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপর বেসরকারি প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। প্যাকেজের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে হাব সভাপতি বলেন, সরকার যদি বাড়ায়, তাহলে আমাদের করার কী আছে। তবে সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত। কারণ এদেশের অধিকাংশ হজযাত্রী নিম্ন-মধ্যবিত্ত।
Leave a Reply